BCS Preliminary পরীক্ষার জন্য আসলেই কি অনেক বেশি পড়তে হয়?
অনেকে অনুধোধ করেছেন, আমি ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় স্বল্প সময়ে যে সাজেশনটি পড়ে BCS প্রিলিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম, সেই সাজেশনটি যেন আমি বিসিএস প্রিলির পরীক্ষার্থীদের জন্য শেয়ার করি। তাই বিসিএস গ্রিলি পাশের জনা সকল বিষয়ের উপর সাজেশনটি শেয়ার করলাম। এর দ্বারা যদি কারো সামান্য উপকারও হয়, আমার পরিশ্রম সার্থক।
আমার মতে, BCS প্রিলির সব টপিক না পড়ে কেবল বেছে বেছে Important বিষয়গুলো বার বার পড়া উচিত। তাই বিসিএস প্রিলির প্রস্তুতি শুরু করার আগে কী কী পড়বেন সেটা না ঠিক করে, আগে ঠিক করুন কী কী বাদ দিবেন। তাহলে আপনার বিসিএস সিলেবাস অনেক ছোট হয়ে যাবে; বিসিএস সিলেবাসকে মহাসাগর মনে হবে না এবং পড়তেও ভালো লাগবে। আর এখানেই আপনার বিসিএস প্রিলির প্রস্তুতি ৫০% শেষ, আর বাকি ৫০% হলো আপনার পরিশ্রম+টেকনিক+ভাগ্য। কেননা, আপনি যদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোই বার বার পড়েন তাহলে পরীক্ষার হলে উত্তর দিতে গেলে আর কনফিউজড হবেন না। আর যদি কোনো বিষয়ই ভালোভাবে না পড়ে সব বিষয়ই কোনো পরিকল্পনা ছাড়া পড়তে থাকেন তাহলে পরীক্ষার হলে দেখবেন কিছুই ভালোভাবে মনে করতে পারছেন না; কিংবা কেবল কনফিউজড হয়ে যাচ্ছেন কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল চিহ্নিত করতে কষ্ট হবে।
কিন্ত আসল কথা হলো, আমরা অনেকেই জানিই না যে বিসিএস প্রিলির জন্য কোন টপিকটি বেশি Important আর কোন টপিক কম Important; কোন কোন টপিকগুলো বাদ দিবো আর কোন কোন টপিকগুলো পড়তে হবে।তার এই বিষয়টা জানেনই না কেবল তাদের জনা আমার দীর্ঘ ৬টি বিসিএস প্রিলির (৩৪ তম-৪০তম: ৩৯তম স্পেশাল বিসিএস বাতীত) বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বিসিএস প্রিলির প্রশ্ন Analysis এই সাজেশনটি রচিত।
আপনি দেখবেন প্রতোক বিসিএস প্রিলিতে ২০০টি প্রশ্নের মধ্যে ১৪০-১৫০টি প্রশ্ব একেবারে কমন টপিক থেকে আসে তারপরও সবাই পারে না । এর মূল কারণ হলো গুরুত্বপূর্ণ এবং কম গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় পড়াতে পরীক্ষার হলে কমন বিষয়গুলো উত্তর দিতে পারছে না কিংবা অনেকেই পারলেও অনেক ভুল হয়ে যাচ্ছে । আমাদের মনে রাখতে হবে বিসিএস প্রিলিতে ১টি প্রশ্রের ভুল উত্তর দেয়ার অর্থ হলো আপনি ১.৫০ নম্বর কম পাচ্ছেন ! কিন্তু শুধু যদি কমন পাওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর সঠিকভাবে দেওয়া যায় তাহলে প্রিলিতে অনায়াসে পাশ করা যায় ৷
কেননা, প্রিলিতে পাশ করার জন্য ২০০ নম্বরে ১৮০-১৯০ পেতে হয় না; ২০০ নম্বরের প্রিলিতে ১২০ নম্বর পেলে যেকোনো প্রশ্নে সেইফ মার্কস ধরা হয় সাধারণত। যেমন, ৩৮তম বিসিএস প্রিলি দেয়ার পর অনেকেই বলেছিল, “প্রশ্ব অনেক সহজ হয়েছে এই প্রশ্নে ১৩০-১৪০ না পেলে টিকা সম্ভবপর নয়”। কিন্ত শেষে দেখা গেল, ৩৮তম প্রিলিতে ১১০-১১৫ পেয়েই টেকে গেছে। মানে, কাট মার্কস ছিল ১১০-১১৫ এর ভিতরে এতো সহজ প্রশ্বতেও! সর্বশেষ ৪০তম বিসি প্রিলিতে কাট মার্কস ছিল ১০৬-১১০ এর মধ্যে ।
[বি.দ্র: এই কাট মার্কস বিভিন্ন পরীক্ষার্থীর মতামতের ভিত্তিতে ধারণাকৃত। বাস্তবে কাট মার্কস পিএসসি ছাড়া কেউ জানে না]
তাই আমি বলি, কম Important টপিকগুলো বাদ দিয়ে শুধু বেশি Important টপিকগুলো পড়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরীক্ষা দিলে প্রিলিতে অনায়াসে পাস করা সম্ভব ইনশাল্লাহ!
আর এই কৌশলকে কাজে লাগিতে আল্লাহর রহমতে জীবনের প্রথম বিসিএস প্রিলি থেকে শুরু করে অর্থাৎ ৩৪তম বিসিএস প্রিলি থেকে ৪০তম বিসিএস প্রিলি পর্যন্ত (৩৯তম স্পেশাল বিসিএস ব্যতীত) টানা ৬টি বিসিএসের কোনোটাই বার্থ হয়নি। যতবার পরীক্ষা দিয়েছি ততবারই পাশ করেছি! এমনকি, আমি পূবালী ব্যাংকে জব করার সময়ও ব্যাংকের এতো প্রেশারের মধ্যে যতবার প্রিলি দিয়েছি ততবার পাশ করেছি ।
তাই বলি, নিয়মিত পরিকল্পনা মাফিক পড়লে ইনশাল্লাহ সফলতা আসবেই । এজন্য উল্টাপাল্টা বেশি জিনিস না পড়ে কেবল গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো বারবার পড়ুন, আমার মতো আপনিও ভালো ফল পাবেন, ইনশাল্লাহ ।
* মনে রাখবেন, “কম পড়বেন কিন্তু Important বিষয়গুলো গুছিয়ে পড়বেন।
লেখক: গাজী মিজানুর রহমান, ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার